রাস্তা চলাচলের অযোগ্য, তাই ঝুড়িতে বসিয়ে চাচাকে ফার্মেসিতে নিচ্ছেন ভাতিজা!
ডালিম হাজারি:
কয়দিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৭৫ বছর বয়সী আব্দুল জলিল। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া শরীরজুড়ে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে তার। আব্দুল জলিলের হাড়গুলোর ওপর চামড়ার আবরণ ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। ওই শরীরে পায়ে ভর করে যে কোথাও যাবেন, সেই বল টুকুও তার নেই।
মহামারি করোনার মধ্যে হঠাৎ নতুন করে দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট। নিতে হবে নেবুলাইজ। এটা নিলে দম নেওয়াটা কিছুটা আরামবোধ করেন ওই বৃদ্ধ। কিন্তু পরমতলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় তার বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর চরখখোলা হয়ে দারোরা বাজার এলাকার রাস্তা পর্যন্ত আগে যানবাহন চলতো। এখন সেই রাস্তায় বড় বড় গর্ত থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে ওই বৃদ্ধ অসুস্থ। তাকে নেবুলাইজার দিতে ফার্মেসিতে নিয়ে যেতে হবে। এ সময় গাড়ি না পাওয়ায় আব্দুল জলিলকে বড় ঝুড়িতে বসিয়ে মাথায় করে ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করেন তার ভাতিজা। বৃদ্ধ চাচাকে মাথায় করে ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া দেখে স্থানীয়রা ছবি তুলেন। আর তোলা সেই ছবিটি স্যোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
বুধবার (৪ আগস্ট) সকালে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের পরমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভাতিজা জয়নাল আবেদীন বলেন, পরমতলা পশ্চিমপাড়া হাজি বাড়ি থেকে লক্ষ্মীপুর চরখখোলা হয়ে দারোরা বাজার পর্যন্ত আগে তিন চাকার যানবাহন চলতো। এখন সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ায় তাও বন্ধ হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে চাচা অসুস্থ। তাকে নেবুলাইজার দিতে ফার্মেসিতে নিয়ে যেতে হয়। এসময় কোনো রিকশা, সিএনজি না পাওয়ায় মাথায় করেই নিয়ে যেতে হয়েছে। রাস্তাটি ভালো না তাই এই পথে রিকশা সিএনজি চলাচল কম।
ধামঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাসেম বলেন, স্বর্ণকারবাজার থেকে দারোরা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দশা। বৃষ্টি হলে এ রাস্তা দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ইঞ্জিনিয়ার সাহেব রাস্তাটি পরিদর্শন করে গেছেন। বারবার আশ্বাস দিলেও সড়কটি সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে মুরাদনগর এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, এ রাস্তাটি বৃহত্তর কুমিল্লা উন্নয়ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটির সংস্কার কাজ করা হবে বলে তিনি জানান।
সূত্র: বাংলানিউজ।