বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লাকসাম খাদ্যগুদামের ১০ কোটি টাকার খাদ্যশস্য আত্নসাৎ

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
মে ৯, ২০১৭
news-image

 

সেলিম চৌধূরী হীরা ঃ
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার খাদ্য গুদামে স্মরণকালের মহা দূর্নীতির ঘটনা ফাঁস হয়েছে। প্রায় ১০ কোটি টাকার ১৮’শ মেঃ টন খাদ্য শস্য আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানা গেছে। সাবেক গুদাম কর্মকর্তা মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। বিভাগীয় অভ্যন্তরীন নিরীক্ষাসহ নানাহ মাধ্যমে উঠে এসেছে স্মরণকালের ভয়াবহ এ মহাদূর্নীতির চিত্র।
২০১৫ সালের ১২ জুলাই থেকে ২০১৬ মালের ২২ জুন পর্যন্ত ওই কর্মকর্তার কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনকালে ১৭টি চালানের বিপরীতে ২৫০.৪৩৭ মেঃ টন গম ও ৩৬টি চালানের বিপরীতে ৫৭৪.৩১৩ মেঃ টন চাল কেলেংকারী ঘটনা ঘটে। তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের রেকর্ড অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে পৃথক পৃথক চালানের মাধ্যমে ৮২৪.৭৫০ মেঃ টন খাদ্যশস্য এ গুদামে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা উল্লেখিত খাদ্যশস্যগুলো গুদামে মওজুদ না করে নিজেই আত্মসাৎ করেছে বলে নিজের স্বীকারোক্তিসহ নানাহ তদন্ত রিপোর্টে সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই কর্মকর্তা নানাভাবে বিষয়টি সমাঝোতার চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় ওই সময়ে কর্মরত অত্র বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয় একটি বিশেষ মহলের জড়িত থাকার আশংকা করছেন কেউ কেউ।
ওই কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারী লাকসাম খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এবং ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর পদোন্নতি পেয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসাবে বদলী হলেও রহস্যজনক কারণে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করে এ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবেই বেশ ক’দিন থেকে যান।

পরে ওই গুদামে নতুন কর্মকর্তা হিসেবে এনামুল হক যোগদান করেন। অনেকদিন পর হঠাৎ করে সাবেক ওই কর্মকর্তার নানা কেলেংকারীসহ মহা দূর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় লাকসাম থানায় মামলাসহ বিভাগীয় নিরীক্ষা ও তদন্ত চলছে। এর সাথে বেরিয়ে আসে ২৫’শ খালি বস্তা বিক্রির সমূদয় অর্থ এবং চালানপত্র, খামাল কার্ড ও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিদর্শন বহিসহ নানাহ দূর্নীতি চিত্র। এছাড়া তার অতীত কর্মস্থলগুলোতেও এ ধরনের দূর্নীতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছেন নানা সংস্থা।

ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক সালাউদ্দিন আহমদকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল হক ভূঁইয়া সেলিম বাদি হয়ে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল লাকসাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে জেলা- উপজেলা খাদ্য দপ্তর কিংবা সংশ্লিষ্ট কোন কর্মকর্তাই মুখ খুলতে চাচ্ছে না। কারণ থানায় মামলা, দাপ্তরিক তদন্ত কমিটি ও জেলা দুদক বিষয়টি দেখাশোনা করছেন।
বর্তমান খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, আপাতত এ বিষয়ে আমার কোন কথাবার্তা না বলাই ভালো।

এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে । দুদক বিষয়টি তদন্ত করছে।

উল্লেখ্য যে, এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত ওই গুদাম কর্মকর্তা মহিউদ্দিন পলাতক এবং ব্যবহার করা মুঠোফোনটি বন্ধ রয়েছে।

আর পড়তে পারেন