শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বুড়িচংয়ে জমে উঠেছে উপজেলার নির্বাচন

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
মার্চ ২৫, ২০১৯
news-image

 

সাকিব অাল হেলাল:

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ৩১ মার্চ। এমতাবস্থায় যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিবর্তন হচ্ছে দৃশ্যপট। মাঠ দখলের লড়াই চলছে গোমতী নদীর এ পাড় ঐ পাড়। ক্রমেই জনগণ উন্মোচিত হচ্ছেন কে কার সমর্থক।

প্রার্থীরা ও তাদের সমর্থক গোষ্ঠী দলে ভেড়াতে চাইছেন ক্লিন ইমেজের সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের। ৫ম উপজেলা নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে কুমিল্লা জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন হচ্ছে ১৩টির। কিন্তু এর মধ্যে ৫টিতে একক প্রার্থী থাকায় সেখানে নির্বাচন হচ্ছে না।

যে সব উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে না, সেগুলো হলো চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বার ও চান্দিনা। এই ৫টি উপজেলায় রয়েছে একক প্রার্থী। অন্যদিকে নৌকা ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে জমে উঠেছে ভোটের লড়াই। সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে বুড়িচং, তিতাস, মেঘনা ও বরুড়া উপজেলায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এসব উপজেলায়।

বিএনপি জামায়াত নির্বাচনে না আসায় আ’লীগ প্রার্থী বনাম আ’লীগের বিদ্রোহী। সেয়ানে-সেয়ানে লড়াই বেশ জমে উঠেছে। বুড়িচং উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬ শত ৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ১০ হাজার ১ শত ২৮ জন, মহিলা ১ লক্ষ ৬ হাজার ৫ শত ২৮ জন। কেন্দ্র ৭৪টি, বুথ ৫২১টি। বুড়িচং উপজেলায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন নদীর পূর্বপাড় আ’লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট হাশেম খান, আনারস মার্কার বিদ্রোহী প্রার্থী নদীর পশ্চিম পাড় আ’লীগের আখলাক হায়দার।

তবে ভোটের মাঠে কে এগিয়ে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বুড়িচং উপজেলার বেশির ভাগ আ’লীগ ক্ষমতাবান নেতাকর্মীই নৌকার পক্ষে একাট্টা। কর্মীসভা ও মতবিনিময় সভায় প্রচুর লোক সমাগম উভয় পক্ষের। বিশেষ করে যুবক শ্রেণির লোকজনই বেশি দেখা যায়। সাথে রয়েছে মুরুব্বি শ্রেণির লোকজন প্রতিদিনই নতুন নেতাকর্মী তাদের সাথে যুক্ত হচ্ছে।

বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম হচ্ছে। অ্যাডভোকেট হাশেম খানের পক্ষে দেখা যায়, কুমিল্লার দক্ষিণ জেলার আ’লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বুড়িচং উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম খোকন, বুড়িচং সদর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শাহ্ আলম, ষোলনল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম, বাকশীমূল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল করিম ঠিকাদার, আ’লীগের যুগ্ম আহব্বায়ক জি এম জাকারিয়া, উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হাজী বিল্লাল হোসেন ঠিকাদার, যুবলীগের নেতা শরিফুল ইসলাম, বুড়িচং উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ জালাল উদ্দিন সহ আরও অনেককে।

অপরদিকে আখলাক হায়দারের পক্ষে দেখা যায়, বুড়িচং উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বাছির খাঁন, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: মোস্তফা, মোকাম ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মুন্সী, ভারেল্লা উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রব, দক্ষিণে শাহ্ কামাল চেয়ারম্যান, পীরযাত্রাপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাকির হোসেন জাহের, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৮কমান্ডার আহব্বায়ক বিল্লাল হোসেন ঠিকাদার প্রমুখ। এদিকে জাতীয় পার্টি দলের মনোনীত চেয়ারম্যান গোলাম বায়েজীদকে প্রচার–প্রচারণায় তেমন দেখা যায় না। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও। তাদের মধ্যে রয়েছেন- মোঃ মতিউর রহমান রুমেল খাঁন(তালা), মতিউর রহমান আলী (চশমা), আলমগীর হোসেন (টিউবওয়েল), মোঃ গোলাম ফারুক(বই), মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন(মাইক), মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন (উড়োজাহাজ), মহিলাদের মধ্যে নাদেরা পারভীন আক্তার(প্রজাপতি), পান্না.আক্তার(কলস), সালমা আক্তার পারভীন(ফুটবল)। তারা সবাই আ’লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

তারা নিজেকে নির্বাচনে জয়ী করতে প্রচারণার ভিন্ন কৌশলে ভোটাদের মন জয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। অপরদিকে সাধারণ জনমত চায় শান্তি। তারা সন্ত্রাস, মাদক ও অস্ত্রবাজি দেখতে চায় না। তারা চায় ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হোক। তারা ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে চায়। কিন্তু অনেকের মনে আবার শঙ্কা রয়েছে আদৌ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে কিনা? তারা ভোট দিতে পারবেন কিনা? এখন ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দেখা যাক কি ঘটে বুড়িচংয়ের ভাগ্যাকাশে। কে হন বুড়িচং উপজেলার ভবিষ্যৎ নেতা।

আর পড়তে পারেন