শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দাউদকান্দিতে বিষপানে এক বছরের ছেলেকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা

আজকের কুমিল্লা ডট কম :
নভেম্বর ২০, ২০১৮
news-image

জাকির হোসেন হাজারী,দাউদকান্দিঃ

এনজিও’র কিস্তির টাকা নিয়ে পারিবারিক কলহে এক বছরের ছেলেকে বিষপানে হত্যা করে বিষপানে মা খালেদা আক্তার(২০) আত্মহত্যা করেছে।

মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার সুন্দুলপুর ইউনিয়নের ভাগলপুর গ্রামের ঈসমাইল সরকারের বাড়ি থেকে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

নিহত খালেদা আক্তার কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মীরখোলা গ্রামের মৃত. বারেক মিয়ার মেয়ে এবং চাদপুরের কচুয়া উপজেলার বাইছারা গ্রামের আবু বকরের স্ত্রী। নিহত শিশুটির নাম আবু সাঈদ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই বছর পূর্বে খালেদা আক্তারকে দুই পরিবারের অজান্তে বিয়ে করেন আবু বকর। পরে খালেদার পরিবার এ বিয়ে মেনে নিলেও আবু বকরের পরিবার বিয়েটি মেনে নেয়নি। এরপর আবু বকর তার স্ত্রীকে নিয়ে শশুর বাড়িতে বসবাস করতে শুরু করেন। এরই মাঝে তাদের সংসারে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এদিকে ব্যবসার জন্য এনজিও থেকে স্ত্রীর নামে ঋণ উত্তোলন করেন আবু বকর। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ৬/৭মাস পূর্বে দাউদকান্দির প্রবাসী ঈসমাইল সরকারের বাড়িতে ভাড়া বাসায় উঠেন। ঋণের টাকা নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো বলে ওই বাড়ির পাশের রুমের ভাড়াটিয়া নাজমা আক্তার জানান। মঙ্গলবার সকালে খালেদার মা নাতির জন্য খাবার নিয়ে এলে ভিতর থেকে দরজা জানালা বন্ধ দেখে তার ডাকাডাকিতে এলাকার লোকজন জড়ো হন। পরে পুলিশকে অবহিত করা হয়।

নিহতের আত্মীয়-স্বজনরা ধারণা করছেন, রাতের কোন এক সময় শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে নিজেও বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন খালেদা।

খবর পেয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মহিদুল ইসলাম স্থানীয় চেয়ারম্যান মাসুদ আলমসহ এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙ্গে মা এবং ছেলে আবু সাইদের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখা যায়্। পুলিশ বিষের আলামতসহ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে প্রেরণ করেন।

নিহত খালেদা আক্তারের মা ফিরোজা বেগম জানান, আমার মেয়ের নামে এনজিও থেকে ব্যবসার জন্য কিস্তিতে টাকা তুলে জামাই । কিস্তি দিতে না পেরে মেয়েকে নিয়ে দাউদকান্দি ভাড়া বাসায় চলে যায়। আমার মেয়েকে দাউদকান্দি ভাড়া বাসায় রেখে জামাই চান্দিনা নুরিতলা জুটমিলে কাজ করে। তবে কিস্তির টাকা নিয়ে প্রায় সময়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো ।

সহকারি পুলিশ সুপার(দাউদকান্দি সার্কেল) মহিদুল ইসলাম জানান, মা-ছেলে বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনায় আমরা কিছু আলামত পেয়েছি। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত বলা যাবে না। আর কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।

আর পড়তে পারেন